অহিংস ছাত্ররাজনীতির মডেল ইসলামী ছাত্রসেনার ৩৮ বছর উদযাপনে লালদীঘিতে ছাত্র সমাবেশ
লালদীঘি ময়দানে ইসলামী ছাত্রসেনার বিশাল ছাত্র সমাবেশে-অধ্যক্ষ আল্লামা জুবাইর
‘ছাত্ররাজনীতিকে কলুষমুক্ত করা না গেলে একটি আদর্শ জাতি গঠন সম্ভব নয়’
ইসলামকি ফ্রন্ট বাংলাদেশ এর কেন্দ্রীয় মহাসচিব জাতীয় নেতা অধ্যক্ষ আল্লামা জয়নুল আবেদীন জুবাইর বলেছেন,- ছাত্রসমাজ হচ্ছে দেশ ও জাতির ভবিষ্যত কর্ণধার, দেশের চালিকা শক্তি। স্মরণাতীত কাল থেকে এদেশের জাতীয় রাজনীতিতে দৃশ্যমান ছাত্রসমাজের গৌরবদ্বীপ্ত পদচারণা। সর্বপ্রকার জাতীয় অর্জনের পরতে-পরতে রয়েছে ছাত্রসমাজের অমূল্য আত্মত্যাগের কীর্তিগাঁথা। কিন্তু অপ্রিয় হলেও সত্য যে, গৌরব ও অহংকারের প্রতীক সেই ছাত্রসমাজ এখন মহল বিশেষের ক্রীড়ানক। সন্ত্রাস,অস্ত্রবাজী,হলদখল, ক্যাম্পাসে আধিপত্য বিস্তারের অসম প্রতিযোগীতা এখন এদের নিকট মূখ্য বিষয়। টেন্ডারবাজী,চাঁদাবাজী,দখল-বেদখল,ইভটিজিং সহ ইত্যাকার গর্হিত কর্মকান্ডের সাথে জড়িয়ে পড়ায় ক্রমাগত ম্লান হয়ে পড়ছে ছাত্ররাজনীতির গৌরবময় অতীত ঐতিহ্য। সুতরাং ছাত্র রাজনীতিকে কলুষমুক্ত করা না গেলে একটি আদর্শ জাতি গঠন সম্ভব নয় বলে উল্লেখ করে ইসলামী ছাত্রসেনার বিজ্ঞান সম্মত ৫ দফা কর্মসূচীই ছাত্ররাজনীতিতে কার্যকর ও ইতিবাচক ভুমিকা রাখতে পারে বলে তিনি মন্তব্য করেন। আল্লামা জুুবাইর আরও বলেন,- আসন্ন একাদশ সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বৃহত্তম ২ দলের কাঁদা ছোড়াছুড়িতে যেভাবে জল ঘোলা হচ্ছে, তা জাতীয় জীবনে এক অশনি সংকেত। এদেশের মানুষ আর কোন ৫ জানুয়ারীর পুনরাবৃত্তি দেখতে চাই না। একটি অবাধ,নিরপেক্ষ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি করতে তিনি নির্বাচন কমিশনের সক্ষমতা বৃদ্ধি করার উপরও গুরুত্বারোপ করেন। আসন্ন একাদশ সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম জেলার ১৫ সংসদীয় আসনে ইসলামিক ফ্রন্টের একক নির্বাচনী প্রার্থী দেয়ার ঘোষণা দিয়ে তিনি ইসলামিক ফ্রন্ট ছাত্রসেনা, আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াত সহ সকল সুন্নী জনসাধারণকে সর্বপ্রকার ভেদাভেদ ভূলে গিয়ে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার আহবান জানান। ইসলামী ছাত্রসেনার কেন্দ্রীয় সভাপতি ছাত্রনেতা এম এম নাঈম উদ্দিন বলেন,- নিরুপদ্রব শিক্ষা রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব হলেও শিক্ষা ক্ষেত্রে বাণিজ্যিকীকরণ ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে। রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জনসংখ্যার তুলনায় অপেক্ষাকৃত অপ্রতূল। ফলে অসংখ্য শিক্ষার্থী ভাল ফলাফল করেও কাংখিত প্রতিষ্ঠানে লেখা-পড়ার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। তাই নতুন নতুন সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার উপর গুরুত্বারোপ করে তিনি বারংবার প্রশ্নপত্র ফাঁস রোধকল্পে কঠোর আইন প্রণয়নের জন্য জোর দাবী জানান। এছাড়াও পাঠ্যসূচীতে ইসলামী ভাবাদর্শ বিরোধী বিষয় সমূহ বাতিল, একমূখী শিক্ষার নামে শিক্ষা সংকোচন নীতি পরিহার, এদেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য, ধর্মমূলবোধ ও সংস্কৃতির বিকাশে পাঠ্যক্রমকে ঢেলে সাজানো, শিক্ষা সংক্রান্ত বিষয়ে নাস্তিক্যবাদী ও আধিপত্যবাদী দোষরদের সম্পৃক্ততা রোধ করা পাঠ্যসূচী প্রণয়নে দেশের খ্যাতনামা শিক্ষাবিদ, ইসলামী স্কলার তথা বিশেষজ্ঞদের মতামতকে প্রাধান্য দেয়া সহ ইসলামী শিক্ষার বিরুদ্ধে চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্রকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিরও দাবী জানান তিনি। ইসলামী ছাত্রসেনা চট্টগ্রাম জেলার উদ্যোগে সংগঠনের ৩৮ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে অদ্য ১৭ জানুয়ারী ২০১৮ ইং রোজ বুধবার বিকেল ২টায় চট্টগ্রাম ঐতিহাসিক লালদীঘি ময়দানে অনুষ্ঠিত বিশাল ছাত্রসমাবেশে বক্তারা উপরোক্ত মন্তব্য করেন। চট্টগ্রাম মহানগর ইসলামী ছাত্রসেনার সভাপতি ছাত্রনেতা কাজী সুলতান আহমদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে উদ্বোধক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইসলামিক ফ্রন্ট কেন্দ্রীয় পরিষদের প্রচার সম্পাদক জননন্দিত আলেমেদ্বীন অধ্যক্ষ আলহাজ্ব আল্লামা হাছান রেজা আলকাদেরী, প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ এর কেন্দ্রীয় মহাসচিব জাতীয় নেতা অধ্যক্ষ আল্লামা জয়নুল আবেদীন জুবাইর। প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইসলামী ছাত্রসেনার কেন্দ্রীয় সভাপতি ছাত্রনেতা এম এম নাঈম উদ্দিন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ’র কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ আল্লামা এস.এম. ফরিদ উদ্দিন, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব এম সোলায়মান ফরিদ, অধ্যক্ষ আল্লামা কাজী আনোয়ারুল ইসলাম খান, স ম হামেদ হোসাইন, আলহাজ্ব এস এম সিরাজ উদ্দিন তৈয়বী। সমাবেশ প্রস্তুতি কমিটির সচিব ছাত্রনেতা ইমদাদুল ইসলামের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন,- অধ্যাপক সৈয়দ হাফেজ আহম্মদ, অধ্যক্ষ মাওলানা নুরুল আমিন,এস.এম. আবদুল করিম তারেক, এম.মহিউল আলম চৌধুরী, মাওলানা ওয়াহেদ মুরাদ, স ম শওকত আজিজ,আলহাজ্ব মঈন উদ্দিন চৌধুরী হালিম,এম আহমদ রেজা, খ ম জামাল উদ্দিন, এনামুল হক এনাম,কামরুল হাসান শাকিল, মিজবাহ উদ্দিন প্রমুখ।