খবরের বিস্তারিত...


হালিমার ঘরে

এপ্রিল 22, 2019 আক্বীদা

হালিমা বাড়ি পৌঁছলেন। পূর্বেই বলা হয়েছে, বছরটি ছিল খরাপীড়িত অজন্মার। সারা তায়েফ অভাবে জ্বলছে। কিন্তু হালিমার অবস্থা আশ্চার্যরকম ভিন্ন। প্রতি সন্ধ্যায় হালিমার ছাগল-ভেড়া খাদ্যে বোঝাই পেট আর দুধেভরা স্তন নিয়ে বাড়ি ফিরতে লাগল। অথচ অন্যদের পশুগুলো বাড়ি ফিরত শূন্যপেটে ক্ষুধার্ত অবস্থায়। দোহনের মত দুধ তাদের পালানে পাওযা যেত না।
লোকেরা তাদের রাখালদের হালিমার পশুগুলোর সাথে নিজেদের পশুগুলো চড়াবার নির্দেশ দিত, তাদের বকাবকি করত। রাখালোরা কথামত তাই করত। কিন্তু অবস্থার কোন রকমফের হাতো না। ওরা বলত- আমরা তো ঐ জায়গায়ই চরাই। একথা শুনে লোকেরা তাজ্জব হতো। (ইব্ন হিশাম) কিন্তু তারা কস্মিনকালেও কি ভাবতে পেরেছিল দীন দুনিয়ার সরদার আজ ভাগ্যবতী হালিমার কোলে। মা আমিনার হয়ে রাব্বুল আলামীন বুঝি এমনি করেই হালিমার দুধের সম্মানী আদায় করে দিচ্ছিলেন।
এভাবে দু’বছর অতিক্রান্ত হলো। মুহাম্মদ (সা)-কে হালিমা বুকের দুধ ছাড়িয়ে দিলেন। অন্যান্য শিশুর তুলনায় তিনি বেশ নাদুসনুদুস হয়ে দ্রুত বেড়ে উঠতে থাকলেন। হালিমা এ রকমতময় শিশুকে কিছুতেই কাছছাড়া করতে চাইছিলেন না। কিন্তু পরের ধন রাখাতো যায় না। তাঁকে মক্কায় তাঁর মায়ের কাছে নিয়ে গেলেন। হালিমা বললেনঃ

এ শিশুকে আমাদের কাছে আরও কিছুদিন রাখতে মন বড় চায়। এর কারণে আমাদের ভাগ্য খুলে গেছে। সুখ-শান্তিতে ভরে গেছে আমাদের ঘর। কিন্তু শুধু কর্তব্যবোধে বাছাকে নিয়ে এলাম আপনার কাছে। আপনি যদি ছেলেটিকে আরও হৃষ্টপুষ্ট হওয়া পর্যন্ত আমার কাছে রাখার অনুমতি দেন তবে খুবই ভাল হয়। তাছাড়া আমার আংশকা যে, এ বরকতময শিশুটি মক্কার বিভিন্ন রোগ-বালাইতে আক্রন্ত হতে পারে।

এরকম অনেক বুঝানোর ফলে আমিনা রাযী হলেন। অতি যত্নের সাথে শিশুকে নিয়ে আবার বাড়ি গেলেন হালিমা। (ইব্ন হিশাম)

তথ্যসূত্র

  • রাসুলুল্লাহ (সঃ) এর জীবনে আল্লাহর কুদরত ও রুহানিয়াত (লেখকঃ মাওলানা মুহাম্মদ আব্দুল গফুর হামিদী, প্রকাশকঃ ইসলামিক ফাউন্ডেশন, বাংলাদেশ)

Comments

comments