ইসলামী ছাত্রসেনার অনুগামী সম্মেলন সম্পন্ন
ইসলামী ছাত্রসেনার অনুগামী সম্মেলনে-অধ্যক্ষ আল্লামা জুবাইর
একুশ শতকের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় একটি দক্ষ
প্রশিক্ষিত ও দেশপ্রেমিক প্রজন্ম গড়ে তোলা আবশ্যক
ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ এর কেন্দ্রীয় মহাসচিব জাতীয় নেতা অধ্যক্ষ আল্লামা জয়নুল আবেদীন জুবাইর বলেছেন,- তরুনরা হচ্ছে সামগ্রিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির প্রধানতম অনুঘটক। তারুণ্য শক্তির মাধ্যমেই গোটা পৃথিবীর আমুল পরিবর্তন সম্ভব। এদেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় ২ কোটি তরুণকে বাদ দিয়ে একটি দেশ গঠন অচিন্তনীয়। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে, দেশের সম্ভাবনাময়ী এ যুব ও তারুণ্য শক্তি বিবিধ সহিংস কর্মকান্ড, অপরাধ প্রবনতা তথা মাদকাসক্তির সাথে জড়িয়ে পড়ে সামাজিক শান্তি ও শৃংখলা বিনষ্ট করছে প্রতিনিয়ত। যার মর্মমূলে রয়েছে সুশিক্ষার অনুপস্থিতি, যথাযথ প্রশিক্ষণ এর অভাব তথা অভিশপ্ত বেকারত্ব। বাংলাদেশের আর্থ সামাজিক বাস্তবতায় পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের জন্য বেকারত্ব রীতিমতো বিষফোঁড়া হিসেবে দৃশ্যমান। দেশের ক্রমবর্ধমান প্রবৃদ্ধির সাথে সাথে কর্মসংস্থান সেই অনুপাতে বৃদ্ধি পায়নি। একথা অস্বীকার করার কোন অবকাশ নেই যে, বেকারত্ব কেবল একটি সরকারকে নয় বরং গোটা দেশ ও জাতিকে বিপদগ্রস্ত করে তুলতে পারে। তাই দেশের সম্ভাবনাময়ী তরুন ও যুব সমাজকে শক্তি ও সম্পদে পরিবর্তন করতে হলে রাষ্ট্রকে কর্মসংস্থান বৃদ্ধির উপর গুরুত্বারোপ করতে হবে। উপরন্ত একুশ শতকের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় একটি দক্ষ, প্রশিক্ষিত ও দেশপ্রেমিক প্রজন্ম গড়ে তোলার কোন বিকল্প নেই।
এডভোকেট এম আবু নাছের তালুকদার বলেছেন,-দেশের প্রচলিত শিক্ষা ব্যবস্থা ও সুশিক্ষার মধ্যে দুস্তর ব্যবধান পরিলক্ষিত হয়ে থাকে। যেমন- সুশিক্ষার অনুপস্থিতি থাকায় অনেক শিক্ষার্থী শিক্ষার সর্বোচ্চ সোপান অতিক্রম করেও অস্ত্রবাজী করে অবলীলায়। মাস্তানী, চাঁদাবাজী, হাইজ্যাক ইত্যাকার অবাঞ্চিত বিষয়াদি তার পেশা। অনাকাংখিত ইভটিজিং করতে তার বিবেক প্রশ্নবিদ্ধ হয়না। নিজেকে একজন টপটেরর বলেত কুণ্ঠিত হয়না। নেশাগ্রস্ত হয়ে মাতলামী করাকে পৌরুষত্বের প্রতীক বলে মনে করে। এসব শিক্ষা কখনও জাতীয় জীবনে কাংখিত সুফল বয়ে আনতে পারে না। তাই ইসলামী ছাত্রসেনা এহেন শিক্ষার বিপরীতে ছাত্রসমাজকে নৈতিকতার স্খলনমুক্ত শিক্ষায় গড়ে তোলার ক্ষেত্রে নিরবচ্ছিন্ন কাজ আঞ্জাম দিয়ে যাচ্ছে।
এডভোকেট জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন,- ছাত্ররা হচ্ছে দেশ ও জাতির ভবিষ্যত কর্নধার, দেশের চালিকাশক্তি। দুঃখজনক হলেও সত্য যে, গৌরব ও অহংকারের প্রতীক সেই ছাত্রসমাজ এখন মহল বিশেষের ক্রীড়নক। দেশ ও জাতির প্রতি দায়বদ্ধতা এখন তাদের নিকট পুরোপুরিভাবে উপেক্ষিত। জাতীয় জীবনে একটি মেধাবী ও নৈতিক গুনাবলী সমৃদ্ধ ও দক্ষ প্রজন্ম গঠন মূল লক্ষ্য হলেও অদ্যাবদি তা গুমরে মরছে। তাই ছাত্র সমাজের মধ্যে কোরআন-সুন্নাহর আদর্শালোকে বিশুদ্ধ চরিত্র গঠন তথা জাতীয় জীবনে একটি আদর্শ, দক্ষ, প্রশিক্ষিত দেশপ্রেমিক নাগরিক গঠনে ইসলামী ছাত্রসেনা গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে।
ছাত্রনেতা এম এম নাঈম উদ্দিন বলেছেন,- শিক্ষা মানুষের ৫টি মৌলিক অধিকারের অন্যতম একটি। মানুষের পরিবর্তন ও উন্নতির শিখরে পৌঁছে দিতে শিক্ষাই হচ্ছে প্রধান অনুঘটক। কিন্তু অপ্রিয় হলেও সত্য যে, সকল নাগরিক বৈষম্যহীনভাবে এ অধিকার ভোগ করতে পারে না। বর্তমানে শিক্ষা ব্যবস্থা এতই ব্যয়বহুল যে, শিক্ষাকে ক্ষেত্রে বিশেষে পণ্য হিসেবেও বলা হয়ে থাকে। শিক্ষা উপকরণ তথা শিক্ষা সম্পর্কিত সব অনুসঙ্গই ব্যয়বহুল। যা সাধারনের নাগালের বাইরে। আবার শিক্ষাক্ষেত্রে কোচিং বানিজ্য অনেকটা গুদের উপর বিষফোঁড়ার মত। ফলে অনেক হতদরিদ্র মেধাবী শিক্ষার্থীর অভিষ্ট লক্ষ্য স্পর্শ করা সম্ভব হয়না। উপরন্তু শিক্ষা জীবনের মাঝপথেই পাঠ চুকাতে বাধ্য হয়। জাতীয় বৃহত্তর স্বার্থে মেধাবীদের এগিয়ে যাওয়ার পথ যাতে কোনভাবেই রুদ্ধ না হয়, তা বিবেচনায় নিয়ে রাষ্ট্রকে দায়িত্ব ও কর্তব্য হিসেবে ভাবতে হবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
ইসলামী ছাত্রসেনার উদ্যোগে অদ্য ৩০ মার্চ ২০১৯ইং রোজ শনিবার সকাল ১০টায় জামালখাঁনস্থ অভিজাত কমিউনিটি সেন্টার এক্সক্লুসিভ কনভেনশন হলে অনুষ্ঠিত “অনুগামী” সম্মেলনে বক্তারা উপরোক্ত মন্তব্য করেন। ইসলামী ছাত্রসেনা সভাপতি ছাত্রনেতা এম এম নাঈম উদ্দিন এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন,- ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ এর কেন্দ্রীয় মহাসচিব জাতীয় নেতা অধ্যক্ষ আল্লামা জয়নুল আবেদীন জুবাইর। উদ্বোধক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন,- ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ এর কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান এডভোকেট আলহাজ্ব এম আবু নাছের তালুকদার। প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন,- ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ এর কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক (ঢাকা বিভাগ) এডভোকেট জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী রেজভী। সম্মানিত বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন,- অধ্যক্ষ আল্লামা এস এম ফরিদ উদ্দিন, অধ্যক্ষ আল্লামা কাজী আনোয়ারুল ইসলাম খাঁন, হাফেজ মাওলানা আমিন, আলহাজ্ব এইচ এম মুজিবুল হক শুক্কুর, অধ্যক্ষ এম ইব্রাহীম আখতারী, এম রাশেদুল ইসলাম রাশেদ। মোহাম্মদ কফিল উদ্দিন রানা ও মোহাম্মদ মনির উদ্দিনের উপস্থাপনায় অনুষ্ঠিত সম্মেলনে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন,- মাওলানা জাকের আহমদ সিদ্দিকী, কে এম নুরুল ইসলাম হুলাইনী, আলহাজ্ব মাওলানা নুর মোহাম্মদ সিদ্দিকী, এম মহিউল আলম চৌধুরী, আলহাজ্ব এম ওয়াহেদ মুরাদ, আলহাজ্ব এ এম মঈনউদ্দিন চৌধুরী হালিম, মাওলানা মহিউদ্দিন তাহেরী। স্বাগত বক্তব্য রাখেন প্রস্তুতি কমিটির আহবায়ক এস এম আবু সাদেক ছিটু। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন ইসলামী ছাত্রসেনা কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ গোলাম হায়দার হাসিব। বক্তব্য রাখেন কাজী আহসানুল আলম, এম আহমদ রেজা, খ ম জামাল উদ্দিন, শেখ ফরিদ মজুমদার, কাজী সুলতান আহমদ, রাহাত হাসান রাব্বি, ইমদাদুল ইসলাম, মোহাম্মদ কামরুল হাসান শাকিল, বদিউজ্জামান, ওহিদুল্লাহ সিরাজী, এম নুরুল আলম ও নুরুল আবছার কফিল প্রমুখ।