শীর্ষ আলেমদের উপর সন্ত্রাসী,হামলা,মামলার সাথে নূন্যতম সম্পর্ক নাই ইসলামী ছাত্রসেনার বিবৃতি
ইসলামী ছাত্রসেনা’র জরুরী সতর্কতামূলক বিবৃতি
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ!
ইসলামী ছাত্রসেনা’র সকল নেতা-কর্মী, শুভাকাঙ্ক্ষী ও প্রিয় সুন্নী জনতার অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, বাংলাদেশ সহ সমগ্র বিশ্বে সুপরিচিত ও স্বনামধন্য, মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তি, আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআত এর মতাদর্শের অনুসারী সুন্নিয়ত ভিত্তিক একক জাতীয় রাজনৈতিক সংগঠন ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ এর আদর্শিকভাবে সমর্থিত ছাত্র সংগঠন এর নাম “ইসলামী ছাত্রসেনা”। হক্কানী- রব্বানী ওলামায়ে কেরাম, সুশীল সমাজ, বুদ্ধিজীবিদের ত্যাগ ও সমস্ত ওলামায়ে আহলে সুন্নাতের দোয়ায় প্রতিষ্ঠিত ছাত্র সংগঠনের নাম “ইসলামী ছাত্রসেনা”। সুন্নিয়ত প্রতিষ্ঠায় শাহাদাত বরণকারী শহীদ লিয়াকত, শহীদ হালিম, শহীদ জিতু মিয়া, শহীদ নঈম উদ্দীন সহ অসংখ্য নেতা-কর্মীর রক্ত, ঘামে ও শ্রমে প্রতিষ্ঠিত সংগঠনের নাম “ইসলামী ছাত্রসেনা”। বাংলাদেশের সর্বস্তরে অত্যন্ত সু-পরিচিত, প্রিয় বাংলাদেশের ছাত্রদের অধিকার আদায় ও সকল অনৈতিক কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে সদা তৎপর রাজনৈতিক সংগঠনের নাম “ইসলামী ছাত্রসেনা”। ছাত্র রাজনীতির ইতিহাসে সকল প্রকার কলুষমুক্ত, সন্ত্রাসমুক্ত, জঙ্গিবাদমুক্ত, মেধাবীদের পদচারণায় মুখরিত, শান্তিপূর্ণভাবে যৌক্তিক যে কোন বিষয়ে আন্দোলন সংগ্রামে অবিচল কাফেলার নাম ইসলামী ছাত্রসেনা। দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে ঘটে যাওয়া যে কোনো অনৈতিক বিষয়ের বিরুদ্ধে ছাত্রদের অধিকার আদায়ে, দেশ এবং জাতীর যে কোন ক্রান্তিলগ্নে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মাধ্যমে দাবী আদায়ে সদা স্বোচ্চার একটি শান্তিপূর্ণ সংগঠনের নাম “ইসলামী ছাত্রসেনা”। জঙ্গিবাদ নির্মূলে সরকারের জিরো টলারেন্স নীতিতে অকুন্ঠ সমর্থন দিয়ে বাংলাদেশের প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্রদের জঙ্গিবাদী কর্মকান্ড থেকে মুক্ত রাখতে জোর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে প্রিয় সংগঠন “ইসলামী ছাত্রসেনা”। ১৯৮০ সালের ২১শে জানুয়ারী প্রতিষ্ঠার পর থেকে নানান চড়াই উৎরাই পেরিয়ে ৪০তম বর্ষ অতিক্রম করছে সকলের প্রিয় সংগঠন “ইসলামী ছাত্রসেনা”।
আমরা অত্যন্ত বেদনার সাথে লক্ষ্য করছি, সম্প্রতি একই সংগঠনের দ্বিধাবিভক্ত বিবদমান দু’টি গোষ্ঠির কাদা ছোড়াঁছুড়িতে আমাদের কোন সংশ্লিষ্টতা না থাকলেও নামের কিছু অংশের অন্ত্যমিলের কারণে দুর্ভাগ্যবশত: ”ইসলামী ছাত্রসেনা” নামটি বার বার উচ্চারিত হচ্ছে, যা দু:খজনক, অনভিপ্রেত, অনাকাঙ্ক্ষিত ও নিন্দনীয়। এদেশে ইসলামের প্রবেশদ্বার ও বারো আউলিয়ার পূণ্যভূমি খ্যাত চট্টগ্রামে চলমান আঞ্চলিক স্বার্থান্বেষী মহলের হিংসা বিদ্বেষের সাথে আমাদের প্রিয় সংগঠন ”ইসলামী ছাত্রসেনা”র কোন রকম দূরতম সম্পর্কও নেই। যা একান্তই বিবদমান গোষ্ঠিগুলোর নিজেদের স্বার্থ নিয়ে দ্বন্ধ ও সংঘাত, হামলা-মামলা ও একে অপরের প্রতি বিষোদগার মাত্র। সচেতন মানুষ মাত্রই অবগত, তারা একই সংগঠনে থাকাবস্থায় প্রতিনিয়ত মাঠে ময়দানে আমাদের বিরুদ্ধে বিষোদগার করায় ব্যস্ত ছিলেন। একই ব্যানারে তারা একই প্রতীকে জাতীয় ও সিটি কর্পোরেশন এবং অন্যান্য স্থানীয় সরকার নির্বাচন করেছেন। এখন দ্বিধাবিভক্ত স্বার্থান্বেষী মহলটি মাঠে ময়দানে একে অপরের বিরুদ্ধে বিষোদগার করছেন, যার সাথে আমাদের সংগঠন “ইসলামী ছাত্রসেনা”র কোন নেতা-কর্মীর কোন রকম সংশ্লিষ্টতার প্রশ্নই আসে না। তারা কোন এক অদৃশ্য স্বার্থের দ্বন্দে একে অপরের বিরুদ্ধে লেগেছেন। আমরা আরো লক্ষ্য করছি যে, সম্প্রতি তাদের অন্তর্কোন্দল ও বিরোধার্থক পরিস্থিতিকে কাজে লাগিয়ে একটি স্বার্থান্বেষী মহল ঐক্যের কথা বলে মাঠে নামছেন এবং কৌশলে নিজেরা ফায়দা হাছিলের অপচেষ্টা করছেন। সরলপ্রাণ সকল সুন্নী মুসলমানকে এ বিষয়ে সতর্ক দৃষ্টি রাখার বিনীত অনুরোধ করছি।
আমরা হলফ করে বলতে পারি “ইসলামী ছাত্রসেনা“র কোন নেতা-কর্মী চট্টগ্রামভিত্তিক চলমান নীতি বিবর্জিত কর্মকান্ডের সাথে কোনভাবেই যুক্ত নয়। একথা অনস্বীকার্য যে, আমরা গভীরভাবে পর্যালোচনা করে লক্ষ্য করছি আমাদের প্রিয় সংগঠন “ইসলামী ছাত্রসেনা”র সাথে মিল রেখে প্রায় একই নামে প্রতিষ্ঠিত নামের সাথে বাংলাদেশ যুক্ত (সংক্ষেপে বা.ই.ছা.সে) নামে একটি সংগঠন মাঠে ময়দানে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড সহ নানান কুকীর্তি করে যাচ্ছে। আমরা আরো লক্ষ্য করছি যে, তাদের নেতাদের নির্দেশে তাদের সাংগঠনিক প্যাডে বিবৃতি দিয়ে, দেশের বিভিন্ন এলাকায় প্রতিরোধ কমিটি করার ঘোষণা দিয়ে স্বনামধন্য আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে সুপরিচিত শ্রদ্ধেয় সুন্নী ওলামায়ে কেরাম, সম্মানিত মুহাদ্দিস, সম্মানিত মুফাস্সিরগণের উপর প্রতিনিয়ত হামলা-মামলা ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছেন। তারা তাদের একপক্ষের নেতাদের দ্বারা প্ররোচিত হয়ে নিজেরা একে অপরকে প্রতিহত করার মানসে বিবদমান বিভক্ত পক্ষদ্বয় মামলা হামলা সহ অনৈতিক কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছেন। বিবদমান পক্ষদ্বয় একে অপরকে দোষারোপ করতে গিয়ে আমাদের কোন কোন নেতাকেও প্রতিনিয়ত আঘাত করছেন যা নিন্দনীয় ও চরম মূর্খতা ছাড়া আর কিছুই নয়। বিবদমান দু’টি পক্ষের প্রতিনিয়ত এমন অশোভন কর্মকান্ডে জাতি বিস্মিত ও হতাশ। সুন্নী অঙ্গনে যা কলঙ্কজনক অধ্যায় হিসেবে চিহ্নিত হচ্ছে । দুনিয়াবী কায়েমী স্বার্থবাজ গোষ্ঠিগুলোর চলমান এই হিংসা-হানাহানিতে বাইছাসে ছাত্র নামধারী সংগঠনের যে সমস্ত ব্যক্তি এহেন আপত্তিকর কাজে নিজেদের জড়িয়ে প্রতিনিয়ত এমন অনৈতিক কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছেন, হামলা-মামলা কুরুচিপূর্ণ ব্যবহার ও লেখনি দ্বারা অন্য সম্মানিত ব্যক্তিবর্গের সম্মানহানি করছেন, সমাজের প্রতিটা স্তরে এসব তথাকথিত ছাত্র নামধারীদের বয়কট করার জোর দাবি জানাচ্ছি। ” ইসলামী ছাত্রসেনা”র পক্ষ থেকে তাদের বলতে চাই- তাদের এসকল কর্মকান্ড অত্যন্ত আপত্তিকর ও ছাত্র রাজনীতির নীতি আদর্শের সাথে সাংঘর্ষিক।
আমরা দ্ব্যার্থহীন কন্ঠে আরো বলতে চাই “ইসলামী ছাত্রসেনা”র ব্যানারে কোন নেতা-কর্মী কখনো অপর পক্ষের কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান বা সংগঠনের দায়িত্বশীল কাউকে হামলা-মামলা করার নজির নেই। বরঞ্চ “ইসলামী ছাত্রসেনা”র নেতা-কর্মীগণ বিনা দোষে প্রতিপক্ষের ঈর্ষার বলী হয়ে হামলা-মামলার স্বীকার হয়েছেন এবং হাসিমুখে সকল হয়রানি ও লাঞ্চনা বরণ করে তা আইনি মোকাবেলার মাধ্যমে বিজ্ঞ আদালত কর্তৃক নির্দোষ প্রমাণিত হয়ে বিজয়ী বেশে সমাজ টিকে আছে।
প্রিয় সংগঠন ইসলামী ছাত্রসেনা সম্মানিত ওলামায়ে কেরাম, সম্মানিত ওয়ায়েজ, দ্বীনের খাদেম, সুন্নীয়তের প্রচারে নিয়োজিত আলেম ওলামা, পীর মাশায়েখগনের খানকা, দরবার, বুজুর্গানে দ্বীনের হুজরা, সুন্নীয়তে বিশ্বাসী ও শিক্ষাদানে নিয়োজিত প্রতিষ্ঠান বা মারকাজ, দ্বীনের কাজে সদা নিয়োজিত সম্মানিত আসাতেজায়ে কেরাম, স্কুল- কলেজ -মাদরাসা বা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক বা দ্বীনের দায়ী মুবাল্লিগগনকে সর্বদা সম্মান ও শ্রদ্ধার চোখে দেখে। কাউকে অপমান অপদস্থ করে প্রতিষ্টা পাবার হীন মানসিকতা এই সংগঠনের কারো মাঝে নেই। ইসলামী ছাত্রসেনার কর্মী হয়ে কাউকে আঘাত করে বা কারো সম্মান হানী করে রাজনীতির মাঠে টিকে নীচু মানসিকতা আমরা কখনো লালন করিনা। আমাদের মহান নেতৃবৃন্দ আমাদেরকে সে শিক্ষা কখনো দেননি।
তাই সকল নেতাকর্মী ও সুন্নী মুসলানের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, ইসলামী ছাত্রসেনা একক এবং সন্ত্রাসমুক্ত কূটচালমুক্ত শান্তির নীতিতে অটল থেকে প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামার আদর্শ প্রতিষ্ঠায় অবিচল এক ছাত্র সংগঠনের নাম। অন্য কোনো ছাত্র নামধারী তথাকথিত সংগঠনের নেতা-কর্মীর অনৈতিক কর্মকান্ডের দায়ভার কোনোভাবেই আমাদের প্রিয় সংগঠন ইসলামী ছাত্রসেনার উপর বর্তায় না। সকল ওলামায়ে কেরাম, সুন্নী জনতা, রাজনৈতিক নেতা কর্মীদের প্রতি একান্ত অনুরোধ; নাম দেখে বিভ্রান্ত না হয়ে বরং সঠিক ছাত্র নেতৃত্বের সূতিকাগার ‘ইসলামী ছাত্রসেনা’ কে চিনুন, জানুন এবং কথিত ছাত্র সংগঠন থেকে দূরে থাকুন।
আশা করি কোনো বক্তব্য, বিবৃতি বা প্রতিবাদের সময় গোষ্টিবদ্ধ যে সংগঠনের বিরুদ্ধে বলছেন সে সংগঠনের নামটি শুদ্ধ পরিপূর্ণ সঠিকভাবে বলবেন। নয়তো অন্য নির্দোষ সংগঠনের উপর অন্যায়ভাবে আরোপিত মিথ্যার বিষয়ে আপনাকে জবাবদিহি করতে হবে এবং নীতি আদর্শের চর্চাকারী সংগঠন ইসলামী ছাত্রসেনা’র উপর মিথ্যা আরোপিত হবে যা কোনোভাবেই গ্রহনযোগ্য নয়।
আলোচ্য বিষয়ে সকল পীর মাশায়েখ, ওলামায়ে কেরাম, বুদ্ধিজীবি, রাজনৈতিক সংগঠনের নেতাকর্মী, সকল সুন্নী সংগঠনের সাথে জড়িত ব্যক্তিবর্গ ও সর্বস্থরের জনসাধারনকে চোখ-কান কোলা রেখে সঠিক বিচার বিশ্লেষণে মনোনিবেশ করে সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে জড়িত বা.ই.ছা.সে’র অনৈতিক কর্মকান্ডের সাথে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদমুক্ত প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামার আদর্শের ঝান্ডাবাহী, আউলিয়ায়ে কেরামের আদর্শের অনুসারী, সুন্নী ওলামায়ে কেরাম ও দরবার খানকার পীরমাশায়েখদের দোয়া ও সহযোগিতায় প্রতিষ্ঠিত ইসলামী ছাত্রসেনা’র প্রতি সুবিচার করে একে এহেন অনৈতিক কর্মকান্ডের সাথে না জড়ানোর জন্য বিনীত অনুরোধ করছি।
বিষয়টি অতীব গুরুত্বপূর্ণ।
নিবেদকঃ
এম এম নাঈম উদ্দীন
সভাপতি
ও
ছৈয়দ মুহাম্মদ গোলাম হায়দার
সাধারন সম্পাদক,
ইসলামী ছাত্রসেনা কেন্দ্রীয় পরিষদ।