আজ পবিত্র শবে মেরাজ
যথাযথ ধর্মীয় মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে বুধবার দিবাগত রাতে সারাদেশে পবিত্র শবে মেরাজ উদযাপিত হবে।
আজ মঙ্গলবার ইসলামিক ফাউন্ডেশনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
লাইলাতুল মিরাজকে শবে মিরাজ বলা হয়। এই রাতে হজরত মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) মহান আল্লাহর ইচ্ছায় ঊর্ধ্বাকাশে আরোহণ করেন এবং মহান আল্লাহর সাথে সাক্ষাৎ করেন। মুসলমানরা ইবাদত-বন্দেগির মধ্য দিয়ে এই রাতটি উদযাপন করেন।
ইসলামে মিরাজের বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে, কেননা এই মিরাজের মাধ্যমেই ইসলাম ধর্মের পঞ্চস্তম্ভের দ্বিতীয় স্তম্ভ নামাজ, মুসলমানদের জন্য আল্লাহর তরফ থেকে প্রিয় নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) নিয়ে আসেন। এই রাতেই দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ মুসলমানদের জন্য ফরজ করা হয়।
হাদিসের ভাষ্য অনুযায়ী, রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর ৫০ বছর বয়সে নবুওয়াতের দশম বর্ষে রজব মাসের ২৬ তারিখ দিবাগত রজনীতে মিরাজের বিস্ময়কর ঘটনা সংঘটিত হয়েছিল। ওই রাত্রিতে তিনি কাবা শরিফের চত্বরে (হাতিমে) অথবা কারও মতে, উম্মে হানীর ঘরে শায়িত ও নিদ্রিত ছিলেন। এমন সময় ফেরেশতা জিব্রাইল (আ.) সেখানে এসে তাঁকে ঘুম থেকে জাগালেন, ওজু করালেন, সিনা চাক করলেন এবং ‘বোরাকে’ চড়িয়ে মুহূর্তের মধ্যে বায়তুল মোকাদ্দাস পৌঁছালেন। সেখানে হজরত মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘ইমামুল মুরসালিন’ হিসেবে তাঁর ইমামতিতে সমস্ত নবী-রাসুলকে সঙ্গে নিয়ে দুই রাকাত নফল নামাজ আদায় করলেন। এরপর তিনি আবার ‘বোরাকে’ চড়ে মহাকাশ পরিভ্রমণ করলেন এবং সপ্তম আকাশে তাঁর সঙ্গে হজরত আদম (আ.), হজরত ঈসা (আ.), হজরত ইয়াহ্ইয়া (আ.), হজরত ইউসুফ (আ.), হজরত ইদ্রিস (আ.), হজরত হারুন (আ.), হজরত মূসা (আ.) ও হজরত ইব্রাহিম (আ.)-এর সঙ্গে দেখা-সাক্ষাত্ ও সালাম বিনিময় হলো। নবীদের সংবর্ধনা শেষে সেখান থেকে সপ্তম আকাশের ওপর ‘সিদরাতুল মুনতাহা’ নামক স্থানে পৌঁছালেন, যেখানে জিব্রাইল (আ.) থেমে গেলেন।
এরপর নবী করিম (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) একাকী ‘রফরফে’ চড়ে ‘বায়তুল মামুরে’ উপনীত হয়ে আরশে মুয়াল্লায় আল্লাহর দরবারে উপস্থিত হন। এখানে তিনি মহান আল্লাহর সান্নিধ্য লাভ করেন এবং প্রভুর সঙ্গে একান্ত আলাপে মিলিত হন। আশেক ও মাশুকের মধ্যে কথোপকথন হলো। আল্লাহ তাআলা তাঁকে সমগ্র সৃষ্টিরহস্য বুঝিয়ে দিলেন এবং বেহেশত-দোজখ দেখিয়ে দিলেন, যাতে এ সম্বন্ধে কথা বলতে তাঁর মনে কোনো সন্দেহের উদ্রেক না হয়। সবশেষে তিনি সৃষ্টিকর্তার কাছ থেকে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের বিধান নিয়ে আবার বোরাকে আরোহণ করে মুহূর্তের মধ্যে ধরণির বুকে ফিরে এলেন।