ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ চট্টগ্রাম জেলার বিশাল কর্মী সম্মেলনে- জননেতা ছৈয়দ বাহাদুর শাহ মোজাদ্দেদী
“সরকারের প্রভাবমুক্ত স্বাধীন নির্বাচন কমিশনই সুষ্ঠু নির্বাচন এর গ্যারান্টি নিশ্চিত করতে পারে” ——————————————————————————-
ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ এর চেয়ারম্যান জাতীয় নেতা পীরে তরিকত আল্লামা ছৈয়দ বাহাদুর শাহ মোজাদ্দেদী বলেছেন- দেশে নির্বাচনী ব্যবস্থাপনা এখন প্রহসনে পরিণত হয়েছে। নির্বাচনের প্রতি ভোটারদের কোন আগ্রহ পরিলক্ষিত হয়না। ভোটাররা ক্রমাগত ভোটকেন্দ্র বিমুখ হয়ে পড়ছে। যার অন্যতম কারণ হচ্ছে ইসির প্রতি ভোটারদের আস্থার সংকট। নির্বাচনের ক্ষেত্রে অতীতের পুনরাবৃত্তি হোক, জনগণ তা আর দেখতে চায় না। নিবন্ধিত দলের সকল অংশীজনেরই নির্বাচনে অংশগ্রহন নিশ্চিত করতে হবে।এক্ষেত্রে সর্বাগ্রে ইসিকে স্বীয় ক্ষমতা ও অধিকার সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে। কারও ইচ্ছাপূরণ ইসির কাজ নয়। সরকারের প্রভাবমুক্ত স্বাধীন নির্বাচন কমিশনই সুষ্ঠু নির্বাচন এর গ্যারান্টি নিশ্চিত করতে পারে বলে মন্তব্য করে তিনি আরও বলেন- স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তি ও হেফাজতিরা এখন কৌশল পরিবর্তন করে রাষ্ট্রীয় নীতি নির্ধারক হতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। এদের অপকৌশলের বিরুদ্ধে সজাগ ও সতর্ক থাকতে হবে। অন্যথায় জাতীয় জীবনের সকল অর্জন ম্লান হয়ে যাবে বলে তিনি আশংকা প্রকাশ করেন। এছাড়াও সম্মেলনে তিনি বলেন-অবিলম্বে বর্ধিত জ্বালানীমূল্য, নিত্যপণ্যের মূল্য, ডলারের দাম এবং খাদ্য সংকট স্বাভাবিক পর্যায়ে আনতে হবে। অর্থ পাচারকারীদের চিহ্ণিত পূর্বক তাদের নাম জনসম্মুখে প্রচার করাসহ পাচারকৃত অর্থ ফিরিয়ে আনতে সরকারকে ইতিবাচক ও বলিষ্ঠ পদক্ষেপে এগিয়ে যাওয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। অধ্যক্ষ আল্লামা জয়নুল আবেদীন জুবাইর বলেছেন- রাজনীতি একটি সেবামূলক কাজ বটে। কিন্তু বাংলাদেশ এর প্রেক্ষাপটে বর্তমান রাজনীতি এখন ভিন্ন চেহারায় দৃশ্যমান। রাজনীতির প্রতি সাধারণ মানুষ ত্যক্ত-বিরক্ত। রাজনীতির প্রতি তরুণ-যুবক শ্রেণীর নিকট অতীতে যে আগ্রহ পরিলক্ষিত হতো, সা¤প্রতিক সময়ে সে ধারায় ছন্দপতন ঘটেছে। অবাঞ্ছিত রাজনৈতিক বিভাজন গণতান্ত্রিক সংস্কৃতিকে গিলে খেয়েছে। প্রতিষ্ঠা পেয়েছে আত্মপ্রচার সংস্কৃতি, অগণতান্ত্রিক, স্বেচ্ছাচারী, ফ্যাসিবাদী মানসিকতা, আদর্শহীনতা ও দুর্বৃত্তায়ন। জ্যামিতিক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে কালো টাকার দৌরত্ব। ক্ষমতাকেন্দ্রিক রাজনীতির অধিকতর চর্চা হওয়ার কারণে জনমতের প্রতিফলনে বিঘ্নতা সৃষ্টি হচ্ছে প্রতিনিয়ত। যা জাতি হিসেবে আমাদের জন্য মোটেও সুখকর বিষয় নয়। অতএব রাজনীতিতে সুস্থধারা ফিরিয়ে আনতে হলে ইসলামী আদর্শের প্রকৃত চর্চা ও অনুসরণের কোন বিকল্প নেই। বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক মমতাজ উদ্দীন চৌধুরী বলেছেন- বলেছেন-দেশের চিহ্নিত একটি মহল অপপ্রচার ও প্রোপাগন্ডার মাধ্যমে বিশ্ব দরবারে ইসলাম ধর্মকে বিতর্কের মুখে ঠেলে দিচ্ছে। ইসলাম বিকৃতকারী একটি ঘৃণ্য অপশক্তির কতিপয় হীন কর্মকান্ডের কারণে ঢালাওভাবে ইসলামী রাজনীতিকে দায়ী করা হচ্ছে। কতিপয় উগ্রপন্থি মুসলিম নামধারীদের অবাঞ্ছিত কর্মকান্ডের সুবাদে সকল ইসলামী দলকেই জঙ্গি তকমা দেয়া হচ্ছে। যা ইসলামী রাজনীতি বিরোধী এক সুগভীর চক্রান্ত ও সুদুরপ্রসারী ষড়যন্ত্র বলে তিনি মন্তব্য করেন। ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ চট্টগ্রাম জেলার উদ্যোগে গতকাল ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২২ ইং রোজ শনিবার বিকেল ৩টায় নগরীর এম এম আলী রোডস্থ রয়েল গার্ডেনে অনুষ্ঠিত কর্মী সম্মেলনে বক্তারা উপরোক্ত মন্তব্য করেন। ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ চট্টগ্রাম মহানগর সভাপতি আলহাজ্ব এইচ এম মুজিবুল হক শাকুর এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ এর কেন্দ্রীয় চেয়ারম্যান জাতীয় নেতা পীরে তরিকত আল্লামা ছৈয়দ বাহাদুর শাহ মোজাদ্দেদী। প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ এর কেন্দ্রীয় মহাসচিব জাতীয় নেতা শায়খুল হাদিস অধ্যক্ষ আল্লামা জয়নুল আবেদীন জুবাইর। উদ্বোধক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ এর কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক মমতাজ উদ্দীন চৌধুরী। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- এডভোকেট আবু নাছের তালুকদার, অধ্যক্ষ আল্লামা এস এম ফরিদ উদ্দীন, আল্লামা কাজী জসিম উদ্দিন, অধ্যক্ষ আবু তৈয়ব আশরাফি, আল্লামা খাজা আরিফুর রহমান তাহেরী, আল্লামা মোশাররফ হোসেন হেলালী, স ম হামেদ হোসাইন, পীরে তরিকত আল্লামা হাবিব উল্লাহ বাগদাদী, অধ্যক্ষ আল্লামা হাসান রেজা আলকাদেরী, অধ্যক্ষ মাওলানা ছৈয়দ জসিম উদ্দিন তৈয়বী, অধ্যক্ষ এম ইব্রাহীম আখতারী, আলহাজ্ব আব্দুস সবুর খান, স ম শহিদুল হক ফারুকী, অধ্যাপক মাওলানা ছৈয়দ হাফেজ আহমদ, আলহাজ্ব মাওলানা ওয়াহেদ মুরাদ, মাওলানা রফিকুল ইসলাম নেজামী, মাওলানা এ এম মঈনউদ্দীন চৌধুরী হালিম, অধ্যক্ষ আল্লামা শামসুদ্দোহা, মাওলানা হাসমত আলী তাহেরী, মোজাম্মেল হোসাইন,শহিদুল্লাহ সাদা, কাজী আহসানুল আলম, কফিল উদ্দীন রানা, ইসলামী ছাত্রসেনার কেন্দ্রীয় সভাপতি এ বি এম আরাফাত মোল্লা, এস এম আবু সাদেক ছিটু, খ ম জামাল উদ্দিন, আহমদ রেজা, কাউসাররুল ইসলাম সোহেল, ফরিদুল হক ও তৌহিদ মুরাদ সুমন প্রমূখ। উলেখ্য যে, বিকেল ৩টায় কর্মী সম্মেলন শুরুর কথা থাকলেও বিকেল ২টার মধ্যে হলের ভেতর- বাহির কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়। সম্মেলন স্থলের আশপাশস্থ এলাকা মিছিলের গগনবিদারী ¯স্লোগানে প্রকম্পিত হয়ে উঠে। নেতা-কর্মীদের বাঁধভাঙা উচ্ছ¡াস ভিন্ন আবহের সৃষ্টি করে। পরিশেষে মিলাদ- কিয়াম ও মুনাজাতের মাধ্যমে সভার সমাপ্তি ঘটে।