হযরত গাউছে জামান মওলানা শাহসূফী সৈয়দ বদরুদ্দোজা মাইজভাণ্ডারী (কঃ) এর সংক্ষিপ্ত জীবনী
বেলায়েতের ধারাবাহিকতায় আখেরী জামানার গাউছুল আজম হিসেবে ধরাধামে আবিভূত হন গাউছুল আজম হযরত আহাম্মদ উল্লাহ মাইজভান্ডারী (কঃ) প্রকাশ হযরত কেবলা এবং গাউছুল আজম গোলামুর রহমান (কঃ)প্রকাশ বাবা ভন্ডারী। যারা উভয়েই ছিলেন ইলমে শরীয়ত, তরিকত, ও মারেফতের মহাসাগর। হযরত কেবলা ও বাবা ভান্ডারী কেবলার পরে মাইজভান্ডার শরীফের আওলাদে গাউছুল আজম মাইজভান্ডারীগনের মধ্যে উজ্জল তম দীপশিখা বাহরুল উলুম,গাউছে জামান মওলানা শাহ্সূফী সৈয়দ বদরুদ্দোজা মাইজভান্ডারী(কঃ)। তিনি ২৪শে ফেব্রুয়ারি ১৯৩৯ ইং ১২ই ফাল্গুন,১৩৪৫বাংলা তারিখে হযরত বাবা ভন্ডারী কেবলার ৩য় শাহাজাদা গাউছে দাওরান মওলানা শাহাসূফী সৈয়দ মাহবুবুল বশর মাইজভান্ডারী(কঃ) এর ঘরে জন্ম গ্রহন করেন। তিনি ভাইদের মধ্যে বড় ছিলেন। মাইজভান্ডার শরীফের দুই প্রানপুরুষ যুগল গাউছুল আজমদ্বয়ের পরে তিনি একমাএ আলেমে দ্বীন আওলাদ।
তিনি ছিলেন জ্ঞানের বিশ্বকোষ।কিন্তু প্রচন্ড অমায়িক,সল্পভাষী ও নরম স্বভাবের। মাএ ১৩ বছর বয়সে তার পিতা গাউছে দাওরান সৈয়দ মাহবুবুল বশর মাইজভান্ডারীর ইন্তেকালের পর নিজে শিক্ষা জীবন শেষ করেছেন যথাক্রমে ফাজিল ও বি.কম পাশ করেন।এক পর্যায়ে লন্ডন হতে কস্ট একাউন্টেসিতে পূর্ন স্কলারশীপ পাওয়া সত্বেও পিতার অকাল শূন্যতা,ছোট দুই ভাই,মাতা ও দরবার পাকের কারনে সে কোর্সে অংশগ্রহন করতে পারেনি। এজন্য শাহ সূফী সৈয়দ আবুল বশর মাইজভান্ডারীর বড় শাহাজাদা সৈয়দ ফরিদ উদ্দিন আহামদ মাইজভান্ডারী যিনি তাকে তার চারিএিক গুনের কারনে নিজের ভাইদের চেয়ে বেশি ভালবাসতেন তার উপর অভিমান করে বলে ছিলেন তোমার মত মেধাবী ছাএ এ সুযোগ ত্যাগ করা উচিত হয়নি। ফাজিল পাশ করার পর কামিল অধ্যয় না করারর কারন ছিল তার মুর্শিদ গাউছুল আজম মওলানা সৈয়দ গোলামুর রহমান বাবা ভান্ডারী ও ফিজিল পর্যন্ত অধ্যয়ন করেছেন। যার কাছে তিনি স্বপ্নের মাধ্যমে বায়াত গ্রহন করে ছিলেন।
তার শিক্ষাজীবন শেষ করার পর প্রথম গ্রন্থ হল “মাইজভান্ডারী সওগাত”। এর পর তিনি তার গবেষণা জীবনের সর্বশেষ্ঠ গ্রন্থ “অলীকুল শিরোমনি হযরত বাবা ভান্ডারী” শীর্ষক গাউছুল আজম বাবা ভান্ডারী জীবনী গ্রন্থ ; যা তার পিতা সৈয়দ মাহবুবুল বশর মাইজভাণ্ডারী (কঃ) অছিয়ত মোতাবেক গ্রন্থনা ও প্রকাশ করেন। এ বই মূলত বাবা ভান্ডরীর জীবনী নয়,তরিকতের এক অমূল্য গবেষণা গ্রন্থ হিসেবে পরিচিত। এছাড়া তিনি বাংলাদেশের বিভিন্ন পএিকায় বিভিন্ন বিষয়ের উপর নিয়মিত লিখেছেন যেগগুলো পরবর্তীতে “আল্লাহর অনুগ্রহের সন্ধানে” নামে সংকলিত হয়েছে। এছাড়া সঠিক ভাবে মিলাদ,কিয়ামের দিক নিদের্শনা মূলক গ্রন্থ ‘দরুদ ও সালাম’ প্রকাশ করেছেন। এছাড়া বজলুল করিম মন্দাকীনির লুপ্ত প্রায় “প্রেমের হেম” পুনঃ সম্পাদনা পূর্বক মাইজভাণ্ডারী গানের শুদ্ধ চর্চার ক্ষেএেও বিশাল অবদান রাখেন তিনি। এ সমস্ত প্রকাশনা হেদায়েতের আলোকবর্তীকা হয়ে কেয়ামত অবধি তার নতুন নতুন ভাল কাজে পরিনত হবে অর্থাৎ পাঠক পৃথিবীর যে প্রান্তে বসেই এই গ্রন্থগুলো অনাদিকাল ধরে পড়বে; হেদায়েত প্রাপ্ত হবে। হযরত মওলানা সৈয়দ বদরুদ্দোজা মাইজভাণ্ডারী (কঃ) তাদের হাদী হিসেবে নিত্য নতুন ভাল কাজের সুফল ভোগ করবেন।
তার এই জ্ঞানচর্চার মহান খেদমতের মাধ্যমে তিনি অমর ও স্মরনীয় হয়েই থাকলেন।হাদীস শরীফে বিধৃত আছেঃ- মানুষ মৃত্যু বরন করার সাথে তার সব কর্ম শেষ হয়ে যায়। কিন্ত তিন ধরনের কর্ম ব্যতীত এক.সদকায়ে জারিয়া দুই.তার জ্ঞান, যাদ্বারা দুনিয়ার মানুষ উপকৃত হয়ে চলছে।তিন.পুত্র যে তার জন্য দোয়া করে।(মুসলিম শরীফ)। নবী বংশের ৩০তম আওলাদ বেলায়েতের আলোতে আলোকিত,সিদ্ব পুরুষ গাউছে জামান মওলানা সৈয়দ বদরুদ্দোজা মাইজভান্ডারী কেবলা তেমনি পরশ মনিতুল্য এক মহান ব্যক্তিত্ব। তার ভূবন ভোলানো হাসি,নূরীছ ছটায় দেদিপ্যমান মুখচ্ছি যেন লক্ষ কোটি আশেকের এক মহা নিয়মায়ক। ইসলামের নির্যাস তাসাউফ পন্থদের জন্য একজন প্রকৃত অভিভাবক,সারগর্ব ও আলোরন কারী বক্তা হিসেবে অনুকরনীয় ব্যক্তি শরীয়ত ও তরিকতের বিবিধ বিষয়েঅন্যতম মর্মস্পর্শী লেখক ও গবেষক,দুনি আখেরাতের যারতীয় সমস্যা সমাধানের এক ঐশ্বরিক ক্ষমতাধর প্রানপুরুষ গাউছে জামান মওলানা সৈয়দ বদরুদ্দোজা মাইজভান্ডারী কেবলা।
নবীজির বংশধর হযরত মওলানা সৈয়দ বদরুদ্দোজা মাইজভান্ডারী তার নামের আগে কখনোই মাত্রাতিরিক্ত বিষেশন ব্যবহার করেনি।বরং খাদেমে আশেকান এর আড়ালে সবার মাঝে প্রেমসুধা বিলিয়েছেন।তার নামের আগে শাহাজাদা শব্দটি ও সযত্নে সরিয়ে ফেলেন এর কারন বর্ননা করতে গিয়ে তিনিবলেন-এক পাঠক তার বরাবর চিঠি লিখেন এই বলে যে তখনার রাজা বাদশাদের ছেলে সন্তানদের শাহাজাদা শাহাজাদী সম্ধোধন করাহত। যাদের অধিকাংশই অত্যাচারী। আপনার পূর্বপুরুষ তো চির সম্মানিত। অত্যাচারী, শোষক শ্রেনীর সাথে তাদেরকে মেলানোর কারন জানতে চাই।মাইজভান্ডার শরীফের একটি মন্জিল প্রধান হওয়ার সুবাদে তিনি এই চিঠি লেখকের দৃষ্টতা পোষন কারী সাব্যস্ত করতে পারতেন,পারতেন শাহজাদা লেখার স্বপক্ষে যুক্তিগুলো তুলে ধরতে কিন্ত মহানুভব এই মহামানব ত্র কিছুই করলেন না। শহাজাদা লেখার লোভই সংবরন করলেন।এবং সহসায় পাঠকের সাহসের তারিফ করতে ও কার্পণ্য করেনি।তেমনি স্বকীয়তায় ভাস্বর ছিল বিস্ মিল্লাহ’র বঙ্গানুবাদ। তিনি তার যে কোন লেখার শুরুতে লিখতেন আল্লাহ রহমানু রহিমের নামে। তার ব্যাখ্যায় তিনি বলতেন:- আল্লাহ শব্দের বাংলা রুপ যেভাবে সমীচিন নয়, তেমনি রহমান শব্দটিকে ও মৌলিক রাখা উওম। কেননা আল্লাহ কোরআনে ইরশাদ করেছেন:- “হে হাবিব আপনি বলে দিন, তোমরা ডাক( প্রার্থনা কর) আল্লাহ বলে অথবা রহমান বলে”(সূরা বনি ইসরাইল,আয়াত-১১০)।
বলাবাহুল্য যে তিনি একজন উচ্চ মার্গের মুফতি, আলেমেদ্বীর, ইজতেহাদ করার ক্ষমতাধর মুসলীম মনীষী ছিলেন। বাংলা,ইংরেজী,আরবী,উর্দু, ফারসী ভাষায় সমান পারদ্শী এক হক্কানী রাব্বানি আলেমে দ্বীন ছিলেন। একদিকে তিনি যেমন সর্বজন শ্রদ্ধেয় শরীয়তের পুরোধা ছিলেন, অপর দিকে লক্ষ কোটি আশেক ভক্তের ক্বলব সংস্কারে মাধ্যমে ক্বলবে জিকির জারী করার ক্ষমতাধর ত্বরীকতের দীক্ষাগুরু ওছিলেন।গাউছুল আজম বাবা ভান্ডারীর (কঃ) কনিন্ঠ শাহাজাদা সৈয়দ শফিউল বশর মাইজভান্ডারী (কঃ) এর জানাজা শরীফের ইমামতি করেন বাবা বদরুদ্দোজা মাইজভান্ডারী। গাউছুল আজম বাবা গোলামুর রহমান মাইজভান্ডারীর যে হরিন্দ্রা রংয়ের সুতার চৌগা (জুব্বা) শরীফ যা বাবা ভান্ডারী হযরত কেবলা হতে প্রাপ্ত হয়েছেন;যার উল্লেখ বাবা ভান্ডারীর জীবনীতে আছে তাও মালিকের অশেষ মেহের বানীতে হযরত গাউছুল আজম বাবা ভান্ডারী তাঁর খাদেম মৌলভী শরাফত আলী প্রকাশ লক্ষীর বাপকে স্পনের মাধ্যমে আদেশ করেন তার সুযোগ্য নাতি গাউছে জামান মওলানা শাহ্ সূফী সৈয়দ বদরুদ্দোজা মাইজভান্ডারীর নিকট পৌঁছিয়েছেন।
তার মুর্শিদের প্রতি তার ভালবাসা ও আত্নসমর্পন এত বেশী ছিল যে, গাউছুল আজম বাবা ভান্ডারী তার প্রিয়তম নাতি ও তার দরবারের উজ্জলতম নক্ষত্র গাউছে জামান বাবা বদরুদ্দোজা মাইজভান্ডারীকে তার উরস্ ২২ শে চৈত্রর সংলগ্ন ২৭ চৈত্র নিজের কাছে টেনে নিয়েছন। লক্ষ আশেকানকে চোখের জলে ভাসিয়ে ধরাধাম ত্যাগ করেন। সেই থেকে প্রতিবছর তার পবিত্র উরস্ শরীফ ২৭ শে চৈত্র মহাসমারোহে মাইজভান্ডার দরবার শরীফের বাইতুল ইতকানে অনুঠ্তি হয়।
(সংগৃহীত)