শিক্ষা আইন-২০২২-এ ধর্মীয় শিক্ষা বাধ্যতামূলক করার দাবীতে ইসলামী ছাত্রসেনার মানববন্ধন অনুষ্ঠিত।
আজ ২৭ জুন’২২ সোমবার বিকাল ৩.০০টায় ইসলামী ছাত্রসেনা কেন্দ্রীয় পরিষদ জাতীয় প্রেস ক্লাব প্রাঙ্গনে শিক্ষা আইন-২০২২ – এ প্রাথমিক থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের স্ব স্ব ধর্মীয় শিক্ষা বাধ্যতামূলক করার দাবীতে ও জাতীয় শিক্ষাক্রমে ইসলামী শিক্ষাকে উপেক্ষা করার প্রতিবাদে এক মানববন্ধনের আয়োজন করে। এতে সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি ছাত্রনেতা এবিএম আরাফাত মোল্লার সভাপতিত্বে ও সংগঠনের ঢাকা মহানগর সাধারণ সম্পাদক শেখ তোফায়েল আহমদ এর সঞ্চালনায় সংগঠনের কেন্দ্রীয় ও জাতীয় নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন। প্রধান অতিথির বক্তব্যে ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ এর ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক জননেতা এডভোকেট জাহাঙ্গীর আলম চৌধূরী রিজভী বলেন, “অতি সম্প্রতি শিক্ষা আইন-২০২২ এর খসড়া চূড়ান্ত করা হয়েছে যেখানে জাতীয় শিক্ষাক্রম থেকে অত্যন্ত সুকৌশলে ইসলামী শিক্ষাকে বাদ দেয়া হয়েছে। যা একেবারেই অযৌক্তিক ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত। কেননা জাতীয় শিক্ষানীতিতে সুষ্পষ্টভাবে বলা আছে যে, শিক্ষার উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য হচ্ছে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরে শিক্ষার্থীদের নিজ নিজ ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষার মাধ্যমে উন্নত চরিত্র গঠনে সহায়তা করা। অথচ দুঃখজনক সত্য হলো এ প্রস্তাবিত শিক্ষা আইন-২০২২ ও শিক্ষাক্রমে শিক্ষার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য অমান্য ও অগ্রাহ্য করা হয়েছে। মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ যে দেশের রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম, সংবিধানের শুরুতে আল্লাহর নামে শুরু করা ও রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম ও স্বাধীনভাবে অন্যান্য ধর্ম পালন করার কথা বলা আছে সেখানে ইসলাম শিক্ষা বাদ সংবিধান অবমাননার শামিল।” ইসলামিক ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা , মাদরাসা বোর্ডের পূর্নগঠন, মুসলিম বিশ্বের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবদানের কথা তুলে ধরে প্রধান বক্তা ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের অর্থ সচিব জননেতা এডভোকেট শাহীদুল আলম রিজভী বলেন, “এক যুগেরও বেশি সময় ধরে ক্ষমতায় আসীন থেকে ব্যক্তিগত জীবনে তাহাজ্জুদ গুজার ও ধর্মভীরু হিসেবে পরিচিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বতন্ত্র আরবী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠাকরণ, সহস্রাধিক দারুল আরকাম মাদরাসা ও অর্ধশতেরও বেশি মডেল মসজিদ নির্মাণ করা সত্বেও শিক্ষাক্রম থেকে ইসলাম শিক্ষা বাদ দেয়া একেবারেই সাংঘর্ষিক ও বেমানান, বরং ডাবল স্ট্যান্ডার্ঢ নীতির প্রকাশ। এটি মূলত প্রধানমন্ত্রীকে বেকায়দায় ফেলে দেয়ার ষড়যন্ত্র কিনা খতিয়ে দেখা দরকার। অধিকন্তু শিক্ষাক্রম হতে ইসলামী শিক্ষা বাদ দেয়ার বিষযটি ধর্মীয় অস্থিরতা সৃষ্টির গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ বলে দেশবাসী মনে করছে। তাই কারা মূলত এটি করছে, কার স্বার্থে ও কেন করছে তা যাচাই করে জাতীয় শিক্ষানীতি ও পাঠ্যপুস্তকে ইসলামী শিক্ষা পুনর্বহাল করাই সময়ের দাবী। অন্যথায় এর দায়ভার সংশ্লিষ্ট আমলাগণ ও সরকারকেই নিতে হবে।” যেখানে বতর্মান তরুণ প্রজন্ম আজ বেকারত্বের অভিশাপ নিয়ে মাদকাসক্ত হচ্ছে, পর্ণোগ্রাফির অবাধ ভয়াবহ ছোবল, সমাজে অনৈতিকতা, অশ্লীলতা বেহায়াপনা মারাত্মক অসনীয় পর্যায়ে এসে পৌছেছে, সামাজিক মূল্যবোধ হারিয়ে যখন আমাদের পরিবারগুলো ভারসাম্যহীন ও বিক্ষিপ্ত হয়ে পড়ছে; সেখানে ধর্মের অমীয় বানীই কেবল মানুষকে আলোর পথ দেখিয়ে প্রশান্তির জীবনে ফিরিয়ে আনতে সক্ষম। যুগ যুগ ধরে মানুষ একটু স্বস্তি, শান্তি আর নির্মল জীবন যাপনের জন্য ইসলামকেই বেছে নিয়েছে। ইসলামী সংস্কৃতির সম্মোহনীর শক্তির অনুসন্ধান বেড়েই চলেছে বিজ্ঞানের এ চরম উন্নতির যুগে। ইসলাম শিক্ষা বাদ দিয়ে বিজ্ঞান শিক্ষাও যেখানে অপূর্ণ সেখানে জাতীয়ভাবে স্কুল কলেজে ইসলামী শিক্ষা বাদ দেয়ার সিদ্ধান্ত চরম অজ্ঞতা বৈ কিছু নয়। ২০কোটি মানুষের প্রাণের শিক্ষা হলো ইসলামী শিক্ষা । অনতিবিলম্বে সরকারের এহেন আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত থেকে ফিরে এসে জাতীয় শিক্ষাক্রমে ইসলাম শিক্ষাকে প্রাথমিক স্তর থেকে উচ্চ মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত বাধ্যতামূলক করার দাবি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি ছাত্রনেতা এবিএম আরাফাত মোল্লা। এতে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ইসলামিক ফ্রন্টের কেন্দ্রীয় নেতা এম ইউসুফ মাহমুদী,অধ্যাপক শফিউল আজম, ইসলামী ছাত্রসেনার সহ- সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম মোস্তফা নিরব, প্রকৌশলী আরিফ আল আবেদী, তোফাজ্জল হোসেন তুহিন, ও ঢাকা মহানগর সভাপতি ছাত্রনেতা আলী আকবর, বোরহান উদ্দিন, মমিন মিয়াজী প্রমুখ।