ইসলাম পরিপন্থী পাঠ্যসূচী সংশোধনের দাবীতে ঢাকায় ইসলামী ছাত্রসেনার সমাবেশে জনতার ঢল
ইসলাম বিরোধী শিক্ষানীতি-২০১০ ও
শিক্ষা আইন-২০১৬ বাতিল এবং ধর্মদ্রোহী বিতর্কিত পাঠ্যসুচি সংশোধনের দাবীতে আজ ১০ জুন বাদ
জুমা বায়তুল মোকারম জাতীয়
মসজিদের উত্তর গেইটে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ ও ইসলামী ছাত্রসেনা ঢাকা মহানগর।
এই বিক্ষোভ সমাবেশের প্রধান অতিথি ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ এর যুগ্ম মহাসচিব আল্লামা খাজা আরিফুর রহমান তাহেরী বলেন, ইসলাম
বিরোধী শিক্ষানীতি-২০১০ ও শিক্ষা
আইন-২০১৬ বাতিল করতেই হবে। ৯২%
মুসলিম প্রধান এই বাংলাদেশে আজ
সবার অগোচরে ইসলামের বিরুদ্ধে
গভীর ষড়যন্ত্র চলছে! তারই ধারাবাহিকতায় আমাদের আগামী
প্রজন্ম কে ইসলাম থেকে দূরে রাখার
জন্য ইসলামের শত্রুরা স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় এমনকি মাদ্রাসাগুলো কে পর্যন্ত ইসলাম শূন্য করার পাঁয়তারা করছে। এই ইসলাম বিদ্বেষীদের ছোবলে আক্রান্ত আমাদের জাতীয় শিক্ষানীতি, যা এখন জাতীয় শিক্ষা আইনে পরিগণিত হচ্ছে। অবিলম্বে এই চক্রান্ত পরিহার করে
মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী পীর-
ওলামা ও সুফিবাদী শিক্ষাবিদ-বুদ্ধিজীবিদের সমন্বয়ে নাস্তিক্যবাদী
শিক্ষা আইন বাতিল করে ধর্ম ও
নৈতিকতা ভিত্তিক সিলেবাস ও
কারিকুলাম চালু করতে হবে। প্রতিবাদ সমাবেশ এর সভাপতি ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ ঢাকা মহানগর সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, এই শিক্ষানীতি ও শিক্ষা আইন পাশের আগে বাংলাদেশের আপামর ইসলাম প্রিয় জনতাকে অন্ধকারে রাখা হয়েছে। পীর-মাশাইখ, আলেম ওলামাদের চোখে ধোঁকা দিয়ে, আড়ালে কাপুরুষদের মতো এই ইসলাম বিদ্বেষীরা বাস্তবায়ন চরছে ইসলাম বিরোধী শিক্ষানীতি-২০১০। যেখানে বাদ দেয়া হয়েছে ৯ম-১০ম শ্রেনিতে পঠিত
বাংলাদেশের জাতীয় কবি কাজী
নজরুল ইসলামের বিখ্যাত কবিতা “উমর
ফারক”, মহাকবি কায়কোবাদ এর
“প্রার্থনা”, কবি গোলাম মোস্তফার “জীবন বিনিময়”, কবি কাজী কাদের নেওয়াজ লিখিত “শিক্ষাগুরুর মর্যাদা” শীর্ষক আদব কায়দা চর্চার শিক্ষা মূলক কবিতা সহ আরও অনেক ইসলামী ভাবাদর্শের পাঠ্যসূচী। দুঃখের বিষয় এই যে, পাঠ্যসূচিতে
প্রবেশ করানো হয়েছে হিন্দুদের
রাধাকৃষ্ণের লীলাকীর্তি নিয়ে লেখা
“সুখের লাগিয়া” নামক কবিতা,
হিন্দুদের মঙ্গলকাব্যের অন্তর্ভুক্ত
দেবী অন্নপূর্ণার প্রশংসা ও
প্রার্থনাসূচক কবিতা “আমার সন্তান”।
কেন এই ধরণের পরিবর্তন আনা হল তা
সিলেবাস প্রণেতা শিক্ষাবিদগণসহ
এনসিটিবি চেয়ারম্যান নারায়ণ
কান্তি পালকে জবাব দিতে হবে।
শিক্ষা মন্ত্রী ও শিক্ষা সচিব এই
ধৃষ্টতার দায় এড়াতে পারেননা। ছাত্র-
ছাত্রীদেরকে সঠিক আদব কায়দা,
শিষ্টাচার ও নৈতিকতার বিপরীতে
এখন শেখানো হচ্ছে রাধাকৃষ্ণের
লীলাকীর্তি, দেব-দেবীর প্রার্থনা ও
প্রজনন শিক্ষার নামে অবাধ
যৌনাচার! আমরা কর্তৃপক্ষকে হুশিয়ার
করে দিতে চাই, বাংলাদেশের
মুসলমানেরা একসাথ হয়ে যখন
আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়বে, তখন ইসলাম
বিদ্বেষীরা পালানোর পথটুকুও খুঁজে
পাবেনা, তসলিমা নাসরিনের মতো
তারা আস্তাকুঁড়ে নিক্ষিপ্ত হবে। তাই
এখনো সময় আছে- সাবধান হোন!
অবিলম্বে এই ইসলাম বিরোধী
শিক্ষানীতি বাতিল করুন,
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের জনগণের
অনুভূতি এবং বিশ্বাসের মর্যাদা দিন।
বিক্ষোভ সমাবেশের প্রধান বক্তা
ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ কেন্দ্রীয়
পরিষদের অর্থ সম্পাদক এডভোকেট
মুহাম্মদ শাহীদুল আলম রিজভী বলেন,
বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতার পর
থেকে কখনো ইসলামের বিরুদ্ধে এতো
নগ্ন হামলা হয়নি যা বর্তমানে চলছে।
বাংলা বই থেকে প্রিয়নবী
(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)’র
জীবন চরিত ও সাহাবায়ে কেরামদের
আলোকিত জীবন চরিত পাঠ্যক্রম থেকে
বাদ দিয়ে আগামী প্রজন্মকে
নাস্তিক্যবাদী এবং ধর্মদ্রোহী করে
গড়ে তোলার জন্য এক শ্রেনির লোক
উঠে পড়ে লেগেছে। মুসলিমপ্রধান
এদেশে আজ মুসলমানদের বিরুদ্ধেই
ষড়যন্ত্র চলছে। অথচ বায়ান্নোর ভাষা
আন্দোলন, একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধ
সহ বাংলার জমীনে ঘটে যাওয়া সকল
মহত্তম আন্দোলনে সরাসরি ভুমিকা
রেখেছে দেশপ্রেমিক মুসলমানরাই।
এদেশের স্বাধীনতার স্থপতি বঙ্গবন্ধু
শেখ মুজিবুর রহমান, শেরে বাংলা একে ফজলুল হক, মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী, হোসেন মুহম্মদ সোহরাওয়ার্দী’র মতো বীরনেতা সহ একাত্তরের সাত বীরশ্রেষ্ঠ, সবাইতো মুসলিম ছিলেন। এমনকি আমাদের বর্তমান মহামান্য রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সহ অন্যান্য সকল প্রধান নেতৃবৃন্দ হচ্ছেন মুসলিম, নিয়মিত কোরআন তেলাওয়াতকারী, তাহাজ্জুদ গুজার। তবে কেন আজ এই ইসলাম বিরোধী শিক্ষানীতি ২০১০, যা শিক্ষা আইন ২০১৬ তে দাড় করানো হল।
কোন উদ্দেশ্যে এমন ধৃষ্টতা রচিত হল?
অবিলম্বে এগুলো বাতিল করে ধর্মপ্রাণ
জনগণের অনুভূতি ও বিশ্বাসের প্রতি
শ্রদ্ধাশীল সিলেবাস দিতে হবে।
ইসলামী ছাত্রসেনা’র কেন্দ্রীয়
সভাপতি মুহাম্মদ মনির হোসাইন বলেন, আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম কে ইসলাম থেকে দূরে রাখার জন্য কৃত এই ষড়যন্ত্র বরদাস্ত করা হবে না। মহানবী
(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)’র আদর্শবিরোধী এই ষড়যন্ত্র রুখে দাঁড়াতে এদেশের সচেতন ছাত্রজনতা প্রয়োজনে নিজের তাজা রক্ত ঢেলে দিতে কসুর করবেনা। ৫ম শ্রেনিতে পঠিত শিক্ষক ও ছাত্রের মধ্যে আদব শেখানো কাজী কাদের নেওয়াজের “শিক্ষা গুরুর মর্যাদা”
নামক কবিতা কেনইবা বাদ দেয়া হল?
বাদ দেয়া হল ৬ষ্ঠ শ্রেণীতে পঠিত
ড.মুহম্মদ শহীদু্ল্লাহর ‘সততার পুরষ্কার’
নামক শিক্ষণীয় ঘটনা সহ সাধারণ
শিক্ষার প্রতিটি শ্রেণিতে এই অবস্থা এবং প্রবেশ করানো হয়েছে ইসলাম বিরোধী নাস্তিক্যবাদী ও হিন্দুয়ানী পাঠ্যসূচি এবং ৬ষ্ঠ শ্রেনির ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষায় পবিত্র কোরআন-হাদীস শরীফ এর আরবী বানানকে বিকৃতভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। শিক্ষামন্ত্রী মহোদয়
ধর্মদ্রোহী এ ষড়যন্ত্রের দায় এড়াতে
পারবেন না। হাজারো অলিআল্লাহর
এই বাংলাদেশের পবিত্র মাটিতে
ইসলাম বিরোধী এই শিক্ষানীতি থাকতে পারেনা। তাই এই শিক্ষা নীতি ও শিক্ষা আইন বাতিল করে স্বাধীনতার চেতনায়
বিশ্বাসী পীর-আলেম সমাজ ও
সুফিবাদী শিক্ষাবিদ বুদ্ধিজীবীদের
সাথে নিয়ে শিক্ষা কমিশন গঠন কর
নতুনভাবে শিক্ষানীতি, আইন ও
পাঠ্যক্রম প্রণয়ন করতে হবে। বিক্ষোভ সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন ইসলামী ছাত্রসেনার কেন্দ্রীয় পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ছাত্রনেতা এম কফিল উদ্দীন রানা, সিনিয়র সহ-সভাপতি এম নাঈম উদ্দিন, ইসলামী ছাত্রসেনা ঢাকা মহানগর সভাপতি ছাত্রনেতা শেখ ফরিদ মজুমদার,সাধারণ সম্পাদক সামিউল শুভ, সাংগঠনিক সম্পাদক হাফেজ আলী
আকবর, ইসলামী ছাত্রসেনা ঢাকা
বিশ্ববিদ্যালয় সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ মোস্তাফা কামাল, সাংগঠনিক সম্পাদক আহাদুল ইসলাম তালুকদার, সম্মিলিত বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি এবিএম আরাফাত, কেরানীগঞ্জ থানার সভাপতি মোঃ শফিকুল ইসলাম,
লালবাগ থানার সভাপতি মোঃ মিজানুর রহমান, মুগদা থানার আহ্বায়ক নূর হোসেন তুষার সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।।
পাঠ্যপুস্তকে ইসলাম বিদ্ধেষের প্রতিবাদে শহীদ মিনার চত্বরে ইসলামী ছাত্রসেনার সমাবেশ অনুষ্ঠিত
ধর্মীয় শিক্ষাবিহীন পাঠ্যপুস্তক আদর্শ মানুষ গড়ার অন্তরায়ঃ লক্ষীপুরে আল্লামা জুবাইর
নারায়নগঞ্জে ইসলামী ছাত্রসেনার কেন্দ্রীয় সভাপতিঃ ইসলামী শিক্ষানীতি বাস্তবায়ন চাই
ইসলাম পরিপন্থী পাঠ্যসূচী অন্তর্ভুক্তির প্রতিবাদে ঢাকায় ইসলামী ছাত্রসেনার বিক্ষোভ সমাবেশ
বায়তুল মোকাররম গেইটে ইসলামী ছাত্রসেনার সমাবেশ বন্ধ করতে হেফাজতের নির্লজ্জ হামলা