খবরের বিস্তারিত...


হযরত আব্দুল মালেক শাহ্‌ (রহঃ) হুজুরের কারামত

জুলাই 24, 2018 আক্বীদা

১৯৯১ সালের ২৯ এপ্রিল কুতুবদিয়া মালেক শাহ হুজুরের কারামত

এহসান আল- কুতুবী

**********

**********

প্রচন্ড ঝড় আর বাতাস । বাড়ি থেকে একটু দূরে ষ্টেশন । সেদিন সবাইকে দেখছি কেন জানি রেড়িও নিয়ে ব্যস্ত ছিল । সবার মূখে শুধু শুনতে পেলাম তুফান হবার কথা । তখন এখনকার সময়ের মত অতটা বিল্ডিং ছিলনা। যা ছিল তাও গুটি কয়েক । তখন সবচেয়ে বড় বিল্ডিং বা দেড় তলা পাকা ঘরটি ছিল মালেক শাহ হুজুরের বাড়ি । পাশে একটি স্কুলও ছিল । দেখতে লাগলাম সন্ধ্যা যত ঘনিয়ে আসছে, মানুষের সমাগমও বাড়ছে । সবাই মালেক শাহ হুজুরের ওই বিল্ডিং বাড়িতে উঠার জন্য প্রস্তুত । এখানে আরেকটি বিষয় যোগ করছি সেটি হচ্ছে মালেক শাহ হুজুরের ওই বাড়িটিতে ছাদে উঠার কোন সিড়ি তিঁনি রাখেননি পর্দার খাতিরে । তাই , সবাই ওই দিন বড় বড় বাঁশের মই বানিয়ে সিড়ি বানিয়ে মানুষ উঠার জন্য ব্যবস্থা করে রেখেছিল । ঠিক মাগরিবের পর আমরা বাড়ি থেকে বের হয়ে ওই বিল্ডিং এ গেলে দেখতে পাই লোকে লোকারন্য হয়ে গেছে । তখন আমি ও আমার মা, নানু, মামারা সবাই ভেতরে আমার এক নানুর রুমে যায় । আমি দরজার পাশে দাড়িয়ে অনুভব করলাম প্রচন্ড ঝড়ের তীব্রতা । তখন নানাভাই শাহজাদা সৈয়দুল মিল্লাত আল-কুতুবী রেড়িওর সাথে ছোট ছোট মাইক ফিটিং করে সবাইকে খবর ও সুন্দর সুন্দর না’ত শুনাচ্ছিলেন । অনুমানিক ঠিক ৯টার দিকে হয়তো খবর আসল পানি তীব্র গতিতে আসবে ও অবশ্যই অনেক বেশি পানি হবে । তার কিছুক্ষনে আমাদের ছাদে তোলা শুরু হল । প্রথমে সবাইকে বড় (চানছিট)’র মধ্যে তুললেও পরে খবর হয় অনেক বেশি পানি হবে তাই ছাদে তুলে ফেলল । তখন আমার নানার কাছে শুধু একটি আওয়াজ শুনতে পাই (আমার গুরাবাজি হডে) আমার ছোট আব্বা কোথায় । তখন খবর পেলাম বড় আব্বা মালেক শাহ হুজুর নাকি বলছে জিক্কার বলা ইক্কা যা । উনাকে যখন সবাই ছাদে আনার জন্য নানারা গেলেন, তখন উনি বলতে লাগলেন, আমি আমার কাজ করতেছি । আমাকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করনা । আমি আল্লাহর কাজে ব্যস্ত । উনি তখন ছিলেন খুব গরম অবস্থায় । পরে নানারা নিরুপাই হয়ে ফিরে আসেন । মালেক শাহ হুজুর তখন পাটিতে বসে বসে আল্লাহর কাজে মশগুল ছিলেন । শুনেছি উনি তখন একটু উচু স্খানে বসে বসে খোদার কাজে মশগুল ছিলেন । উনি যে রমে বসে ছিলেন, তার অনেক উপরে পানি উঠেছেন । উনার বাড়ির চারিদিকে একটা ওয়াল ছিল উচু । ওই ওয়ালটাতে নাকি পানির ধাক্কাটা জোরে লাগাই ভেঙ্গে গিয়ে সবকিছু বেচে যায় । উনার বাড়ির আর কোথাও তেমন কোন ক্ষতি হয়নি । সকালে আমাদের সবার জন্য খাবারের ব্যবস্থা করা হয় । খাবার গুলোও ছিল সব লবনাক্ত, পানি লবনাক্ত, ভাত লবনাক্ত । কোন রকম প্রান বাঁচাতে খাওয়া ।

এখন, শেষ কথা হচ্ছে আল্লাহর এ মহান অলি ইচ্ছা করলে আমাদের সাথে মরনের ভয়ে ছাদে উঠতে পারতেন । কিন্তু, তিঁনি যাননি । তিঁনি সবাইকে বাচাতে আল্লাহর কাজে ব্যস্ত ছিলেন । ওনার হুক্কা ছিল, ওই হুক্কার আগুন সারারাত নিভলনা । যে হুক্কার ধোঁয়া কেউ কখনো দেখেনি ।

আল্লাহর অলিদের কোন ভয় নেই, তারা দুনিয়াতে যেমন বাদশাহ তেমনি পর্দার আড়ালে চলে যাওয়ার পরেও বাদশাহ । তারা দুনিয়ায় থাকতে যেমন আল্লাহর কাছ থেকে সবকিছু নিয়ে দিতে পারেন, তেমনি ওফাতের পরও দিতে পারেন আল্লাহর কাছ থেকে নিয়ে ।আল্লাহ তাদেরকে সব সৃষ্টির কল্যানে প্রেরন করেছেন ।
২৯ এপ্রিল শাহাদত বরনকারী সকলকে আল্লাহ তায়ালা শহীদি মর্যাদা দান করুক ।আমিন ।

Comments

comments