খবরের বিস্তারিত...


হযরত হাকিম আব্দুল হাকিম (রহঃ) এর সংক্ষিপ্ত জীবনীঃ

হযরত হাকিম আব্দুল হাকিম (রহঃ) এর সংক্ষিপ্ত জীবনীঃ
জন্মস্থান; হিন্দুস্তানের পশ্চিমবংগের চব্বিশ পরগনা জেলার বশির হাট মহকুমাধীন হাসানাবাদ থানার অন্তর্গত কালুতলা গ্রামে।

বংশপরিচয়ঃ পিতা আমিন উদ্দিন (রহঃ) কালুতলার বিশিষ্ট ওলী-আল্লাহ ও বুজুর্গ ছিলেন।পুর্ব পুরুষ বিহারের রাজধানী পাটনার মোল্লা মহল সূফী বাড়ি থেকে কালুতলা গ্রামে আসেন।পুর্বপুরুষ রমজাননগর এস্টেটের জমিদার ছিলেন।

হযরত আমিন উদ্দিন (রহঃ) ছিলেন হযরত মাওলানা রিয়াছত আলী খাঁন শাহজাহানপুরী (রহঃ) এর খলিফা।হযরত মাওলানা রিয়াছত আলী খাঁন শাহজাহানপুরী (রহঃ) ১৯৩০ ইং সালে ইন্তেকাল করেন।

হযরত মাওলানা রিয়াছত আলী খাঁন শাহজাহানপুরী (রহঃ) এর পীর ছিলেন হযরত মাওলানা মুফতি ইরশাদ হুসাইন মুজাদ্দেদী রামপুরী (রহঃ) , যিনি হযরত মোজাদ্দেদ আলফেসানী (রহঃ) এর ৮ম বংশধর।

হযরত আমিন উদ্দিন (রহঃ) প্রথমে কাদেরিয়া তরিকায় বায়াত গ্রহন করেন। পরে হাজী রিয়াছত আলী খাঁন (রহঃ) এর পবিত্র হাতে নকশবন্দিয়া মোজাদ্দেদিয়া তরীকায় বায়াত গ্রহন করেন।এবং খেলাফত লাভ করেন।

হযরত হাকিম আব্দুল হাকিম (রহঃ) পিতার নিকট থেকে নেসবতপ্রাপ্ত হন এবং খেলাফত লাভ করেন।

ভারত ভাগের পর ১৯৫২ সালে ততকালিন পূর্ব পাকিস্তানের (বর্তমান বাংলাদেশ) সাতক্ষীরা শহরের কাটিয়া মহল্লায় তিনি হিজরত করে আসেন।

হুজুরের ৪০ খলিফা মধ্যে হযরত খাজা খমির উদ্দিন (রহঃ) , খাজা মামুনুর রশিদ (রহঃ) অন্যতম।

ঘটনা ০১

একবার বিরামপুর থেকে বিদায়ের সময় খাজা খমির উদ্দিন আহমদ (রহঃ) মোর্শেদকে বললেন, ‘ আব্বা, বেয়াদবি হয়ে গেলে ক্ষমা করে দেবেন।’

মোর্শেদ খাজা হাকিম আব্দুল হাকিম (রহঃ) বললেন, ‘ বেয়াদবি তো অবশ্যই করেছেন। খাওয়ার সময় আমি বলেছি আর নেব না, তারপরও জোর করে তুলে দিয়েছেন।আমি বলেছি আর খাব না। তারপরও জোর করে খাওয়াইছেন। কি করেন নি?’

খাজা খমীর উদ্দিন (রহঃ) এর মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ল।ইতস্তত হয়ে পড়লেন।কি বলবেন ভেবে পেলেন না। পরে বুঝলেন এটাও ছিল মোর্শেদের শিক্ষা। হুজুর বুঝিয়ে দিলেন, কেবল আদেশটাই হুকুম নয়।আদেশ নিষেধ উভয়টাই বিনাবাক্য ব্যায়ে পালন করা তরীকার আদব।

ঘটনা ০২

একবার হযরত হাকিম আব্দুল হাকিম (রহঃ) বিরামপুরে এলেন ট্রেনে করে। হযরত খমীর উদ্দিন আহমদ (রহঃ) এবং হযরত মামুনুর রশীদ (রহঃ) সহ বেশ কজন স্টেশনে গেলেন তাকে অভ্যার্থনা জানাতে। মোজাদ্দেদিয়া তরীকাহ নীরব ও গোপন তরীকাহ। এখানে জলী যিকির ও উচ্চ শব্দ যিকির করা নিষিদ্ধ।
হযরত হাকিম আব্দুল হাকিম (রহঃ) সশব্দে শ্লোগান ও তাকবীরও দারুণ অপছন্দ করলেন।

হযরত খমির উদ্দিন আহমদ (রহঃ) ও খাজা মামুনুর রশীদ (রহঃ) উভয়ই তখনো তরীকায় নতুন।তাই এত কিছু জানা ছিল না তাদের।মোর্শেদকে দেখে খুশিতে তারা আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার তাকবীর দিতে থাকলেন।

হযরত হাকিম আব্দুল হাকিম (রহঃ) নাখোশ হলেন।তিনি আর ট্রেন থেকে নামলেন না।বললেন, এই ট্রেনেই আমি ফিরে যাব।

মুরিদগন সবাই অবাক।সকলে অনেক অনুনয় বিনয় করলেন।হযরত বললেন, ‘ তোমাদের কে স্লোগান দিতে বলেছে? ‘ আমি বলেছি? না আমি চেয়েছি?’

হযরত খমীর উদ্দিন (রহঃ) বললেন, আব্বা আমরা নতুন। তাই আমাদের জানা ছিল না।
অত:পর সকলে মিলে ক্ষমা চেয়ে রেহাই পেলেন।

১৯৮১ ইং সালে হাকিম আব্দুল হাকিম (রহঃ) ইন্তেকাল করেন।সাতক্ষীরায় এই মহান ওলীর মাজার শরীফ অবস্থিত।

ছবি: হযরত হাকিম আব্দুল হাকিম (রহঃ) এর পবিত্র মাজার শরীফ।

Comments

comments