খবরের বিস্তারিত...


ব্যানবেইস পুনরায় সংশোধিত তথ্যছক প্রকাশের দাবী

জুন 06, 2021 বিবৃতি

ব্যানবেইস কর্তৃক প্রণীত ভুলে ভরা শিক্ষার্থী তথ্যছক বাতিল করে পুনরায় সংশোধিত তথ্যছক প্রকাশের দাবী ইসলামী ছাত্রসেনার।
——– ——– ——– ——– ——– ——–
ব্যানবেইস কর্তৃক প্রণীত ভুলে ভরা শিক্ষার্থী তথ্যছক বাতিল করে পুনরায় সংশোধিত তথ্যছক প্রকাশের দাবীতে আজ ০৬ জুলাই দেশব্যাপী জেলা প্রশাসক ও জেলা শিক্ষা অফিসারদের মাধ্যমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি পেশ করেছে ইসলামী ছাত্রসেনা।

আজ বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে পাঠানো ইসলামী ছাত্রসেনা কেন্দ্রীয় পরিষদের সভাপতি এ.বি. এম. আরাফাত মোল্লা ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ফরিদ মজুমদার স্বাক্ষরিত স্মারকলিপির অনুলিপিতে প্রনীত তথ্যছকটির অসংগতগুলী তুলে ধরে বলা হয়, বাংলাদেশ বিশ্বমানচিত্রে একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বিচক্ষণতা ও বলিষ্ঠ নেতৃত্বে ১৯৭১ সালে এ দেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে নিজস্ব ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি লালনে সমৃদ্ধ ইতিহাস রচনা করেছে। স্বাধীনতার পর থেকে অতি অল্প সময়ে নানা ক্ষেত্রে বাংলাদেশের যে বিস্ময়কর অর্জন তা বিশ্ববাসীকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে। বিশ্বের অনেক দেশ নিজেদের জাতীয় উন্নয়নে গতি আনতে বাংলাদেশকে অনুসরণ করে থাকে। আবহমান কাল থেকে এদেশের শিক্ষা, কৃষ্টি-সংস্কৃতি, আচার-অনুষ্ঠানের স্বাতন্ত্র্য রীতিনীতি বিশ্ব দরবারে সমাদৃত। এদেশের মানুষ অত্যন্ত ধর্মভীরু। নিজ নিজ ধর্ম পালনে এদেশের মানুষ কখনো কার্পণ্য করে না। সকল ধর্মের মানুষের আন্তঃধর্মীয় সম্প্রীতি বজায় রেখে বসবাস করার বাংলাদেশের সহাবস্থানের নির্মল চিত্র বিশ্বদরবারে অনন্য নজির সৃষ্টি করেছে। দেশের মানুষ নিজ নিজ ধর্ম পালনে যত্নশীল বলেই দেশে বরাবরের মত শান্তি বিরাজ করে থাকে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একজন ধার্মিক বিশ্বনেতা ছিলেন, যা তাঁর রাস্ট্রীয় সফরে পবিত্র হজ্ব, মক্কা মদীনা জেয়ারত সহ, বড়পীর হযরত আবদুল কাদের জিলানী (র.), খাজা গরীবে নেওয়াজ মঈনউদ্দিন চিশতি (র.) দেশে হযরত শাহ্জালাল ইয়মেনী (র.) সহ অসংখ্য আউলিয়ায়ে কামেলীনদের মাজার শরীফ জিয়ারতের মাধ্যমে দিবালোকের মতো প্রমানিত সত্য। দেশ পরিচালনায় তিনি ধর্মীয় দিককে কখনো গৌণ করে দেখেননি। দেশে নিজ ধর্মের অনুশাসন বাস্তবায়নে কার্যকরী ভুমিকা পালনের পাশাপাশি অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের ধর্মচর্চার পথ তিনি অবাধ করে দিয়েছিলেন। দুঃখজনক হলেও সত্য যে, স্বাধীনতার পর থেকে অজ্ঞাত কারণে এদেশের শিক্ষাব্যবস্থায় ধর্মকে গৌণ করে দেখা হয়েছে। অথচ, ধর্মীয় অনুশাসন বর্জিত শিক্ষা মানুষকে আলোর পথ দেখাতে পারে না। ধর্মের প্রতি বঙ্গবন্ধুর যে মনোভাব ছিল তা যদি বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থায় বাস্তবায়ন করা যায় তবে শিক্ষিত সমাজ নিঃসন্দেহে দেশের সম্পদে পরিণত হবে। ধর্মের নামে ধর্মান্ধতা এবং ধর্মহীনতার আড়ালে নাস্তিক্যবাদ দুটোই জাতির জন্য বিপজ্জনক। আমরা সাম্প্রতিক সময়ে লক্ষ্য করেছি, বাংলাদেশ শিক্ষাতথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরো (ব্যানবেইস) কর্তৃক এস্টাবলিশমেন্ট অব ইন্টিগ্রেটেড এডুকেশনাল ইনফরমেশন ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (IEIMS) প্রকল্পের অধীনে ষষ্ঠ শেণি থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের ইউনিক আইডি প্রদানের লক্ষ্যে সরবরাহকৃত তথ্যছক এর ‘ক’ অংশের ৮ নং ক্রমিকে ‘ধর্ম’ অপশনে ইসলাম, হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান এর পাশাপাশি ‘Not a believer’ এবং ‘Refuse to disclos’ অপশন জুড়ে দেয়া হয়েছে। এদেশের প্রতিটি মানুষ কোনো না কোনো ধর্মীয় পরিবারে জন্মগ্রহণ করে থাকে এবং স্ব-ধর্ম চর্চার মাধ্যমে বড় হয়ে থাকে। উল্লেখিত ফরমে ‘Not a believer’ ও ‘Refuse to disclose ‘ এ দুইটি অপশন শিক্ষার্থীদের মনে নিজ ধর্মের প্রতি উদাসীনতা জাগিয়ে নাস্তিক্যবাদের প্রতি ঝুঁকে যাওয়ার প্রবল সম্ভাবনা সৃষ্টি করবে। এতে করে ধর্মীয় অনুশাসন বিবর্জিত একটি গোষ্ঠী সৃষ্টি হয়ে দেশে অশান্তি ছড়িয়ে দিবে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় যেখানে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের নিজ নিজ ধর্ম পালনে উদ্ভদ্ধ করে সুশিক্ষিত করায় ব্রতী হওয়া যৌক্তিক, সেখানে শিক্ষার্থীরা নিজ ধর্ম ত্যাগে উদ্বুদ্ধ হওয়ার সম্ভাবনা আছে এমন তথ্য সংযোজন করে নাস্তিক্যবাদকে প্রাতিষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেয়া সত্যিই দুঃখজনক। আমরা আপামর ছাত্রজনতা ও অভিভাবকদের পক্ষ থেকে এধরনের কার্যক্রমের তীব্র বিরোধিতা করছি।

আমরা আরো লক্ষ্য করেছি, ‘ক’ অংশে ১১ নং ক্রমিক এ শিক্ষার্থীর বৈবাহিক তথ্য চাওয়া হয়েছে। দেশীয় আইনে মেয়েদের বয়স ১৮ বছর এবং ছেলেদের বয়স ২১ বছর পূর্ণ হওয়ার আগে বিবাহ করার অনুমতি নেই। অথচ অনধিক ১৮ বছর বয়সে একজন শিক্ষার্থী দ্বাদশ শ্রেণির গন্ডি পার হয়ে থাকে। সুতরাং, এধরনের তথ্য চাওয়ার কোনো যৌক্তিকতা আছে বলে আমরা মনে করি না।

একই ফরমের একই অংশের ৬ নং ক্রমিক এ লিঙ্গ পরিচয়ের অপশনে পুরষ ও নারী উল্লেখ করা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে এধরনের শব্দ চয়ন নিতান্তই বেমানান। এসব শব্দের স্থলে ছাত্র এবং ছাত্রী উল্লেখ করা যৌক্তিক বলে আমরা বিশ্বাস করি।

Comments

comments